বেস্ট বেঙ্গল     কোলকাতা     কুনর


একটি দল বা গুচ্ছনিরূপিত হয় ভৌগলিক সমাবেশ বা কেন্দ্রীকরণ হিসাবে(একটি মহানগরী/শহর/কিছু সংলগ্ন গ্রামসমূহ এবং তাদের সন্নিহিত অঞ্চলসমূহ) যা কাছাকাছি একই ধরণেরউপাদানের দ্রব্য উপন্ন করছেন এবং মুখোমুখি হচ্ছেন যৌথ সুযোগ সুবিধার ও আশঙ্কার। একটি কারুশিল্পী দল নিরূপিত হয় ভৌগলিক দিক থেকে কেন্দ্রীভূত (প্রধানত গ্রামগুলিতে/ছোট শহরগুলিতে) পরিবার পরিজনের দল যারা হস্তশিল্পের / হস্ত চালিত তাঁতের উপাদিত দ্রব্য সমূহ উপাদন করছেন। একটি বৈশিষ্ট্য সূচক দলে এইরকম উপাদকরা প্রায়ই ঐতিহ্যবাহী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হন, যাহারা বংশানুক্রমে স্বীকৃত দ্রব্য উপাদন করছেন। বস্তুত, অনেক কারুশিল্পী দল হলেন শতাধিক বছরের পুরনো কারুশিল্পী।

কুনর  ক্লাস্টার সম্বন্ধীয়:-


কুনর  পরগনা জেলার আওতায় পড়ছে কলকাতা  ক্লাস্টার।

500-র বেশী কারিগর এবং 15টি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর শক্তিশালী কর্মবল নিয়ে গঠিত হয়েছে বারাসাত ক্লাস্টার। এদেরকে উদ্বুদ্ধ করবার গতি প্রতিদিন বেড়েই চলেছে।

টেরাকোটা:-


টেরাকোটার অপূর্ব সুন্দর ছাঁচের প্যানেলেগুলি আপনি বাংলার মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, যশোহর, হুগলী এবং দীঘাতে পেতে পারেন। এইগুলির বিষয় হলো মুলতঃ লোককথা এবং ছাঁচগুলি ভীষন সুন্দরভাবে পরম্পরাগত দক্ষতা এবং শিল্পসুষমামন্ডিত কারুকাজে পরিপূর্ন।

সাধারনভাবে যে মাটি এতে ব্যবহার করা হয় সেটি নদীর তীরে পাওয়া, গভীর গর্তের মাটি এবং খাত থেকে পাওয়া দু থেকে তিন ধরনের মাটির সংমিশ্রন। অধিকাংশ সময়ে যে জ্বালানী ব্যবহার করা হয় যেটি হলো স্থানীয়ভাবে যে ঝরা পাতা, শুকনো পাতা বা জ্বালানী কাঠ পাওয়া যায় সেটিই ব্যবহার করা হয়। যে ভাটিতে ঐ মাটির পটগুলি পোড়ানো হয় তাতে 700 থেকে 800 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় পোড়ানো হয়।

কুম্ভকার পরিবারের মহিলারা হলেন শিল্পী যারা কুম্ভকারের মাটির চাকা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বিভিন্ন মাটির পাত্রের গলার অংশগুলি গোলাকার করেন এবং পাত্রগুলির উপরের অংশের রুপ দেন। এছাড়াও তাঁরা মাটির খেলনা এবং পুতুল তৈরী করেন যেগুলিকে আগুলে পুড়িয়ে পোড়ামাটির রুপ দেওয়া হয়। বৃহতাকার দেব দেবীর মূর্তি মাটি দিয়ে তৈরী করা হয় এবং এইধরনের মুর্তি তৈরী করে তারা পরিবারের জন্য বেশ ভালো পরিমান অর্থ উপার্জন করেন।

টেরাকোটা, যা মূলত পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলের দিকে বেশী দেখতে পাওয়া যায়, এখন মূলধারার জীবনযাপন পদ্ধতির অনেক জিনিস তৈরী করছে যেমন সুরাই, এটি একটি মাটির কলসী যা জলকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে গবাদী পশুদের খাওয়াবার ডাবা, চা খাবার ভাঁড়, রান্না করবার জন্য মাটির বাসনপত্র, প্লেট, গেলাস, মিষ্টান্ন বহন করবার মাটির পাত্র ব্যবহার করা হয়। এই সকল জিনিসপত্রের অধিকাংশই হলো ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়ার জন্য তৈরী।

ভারতবর্ষের টেরাকোটা এবং মাটির তৈরী পাত্রের শিল্পকলা বেশ গৌরবময় এবং এদের অধিকাংশেরই শিকড় নিবদ্ধ আঠে সেই প্রাচীন ঐতিহাসিক কালে। মাটির পাত্রের ব্যাপকতর বিশ্বজনীন চাহিদা আছে এবং এর ঐতিহ্য নিহিত আছে সেই পঞ্চাশ লক্ষ বছরের পুরানো ইতিহাসে। পোড়ামাটির পাত্রকে হস্তশিল্পের সম্মান দেওয়া হয়েছে এর আবেদন বা চাহিদা অনিবার্য বলে। মাটির তৈরী বিভিন্ন জিনিসপত্র যেমন প্রদীপ, কলসী, ফুলদানী, মাটির পাত্র, সঙ্গীতের যন্ত্রসমূহ, মোমবাতি রাখার স্ট্যান্ড ইত্যাদি আজকাল পাওয়া যাচ্ছে।

কাঁচামাল:-


প্রাথমিক উপকরন: মাটি, সরষের তেল, কুল্ভকারের চাকা, আঠা, শর্করা, মোম, শুকনো পাতা, শুকনো ডালপালা, পাতা, জ্বালানীকাঠ, খড়, লাল মাটি, কালো মাটি, হলুদ মাটি, আরো বিভিন্ন প্রকারের মাটি, খাবার আটা, শর্করা, মাটি, মোম। সাজসজ্জার উপকরন: ছাই, বালি, গোবর, ধানের কুঁড়ো, মাটি, বালি, ফুনানফাড়ি (ভিজে কাপড়), ফুজেই (কাঠের ছেদক), কাংখিল, মাটির পাত্র ঢাকা দেবার সরা, লেপসুম (নলাকার পাটাতন), কৃত্রিম মাটি, সরষের তেল, কুম্ভকারের চাকা, খাবার আটা, শর্করা, মোম, মাটি।

প্রক্রিয়া:-


বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য যে যে আকৃতি প্রয়োজন প্রাথমিকভাবে সেই আকারগুলিকে চাকায় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আকার দেওয়া হয়। কিছু নির্দিষ্ট অংশ যেমন নলাকার অংশ বা হ্যান্ডেল এইগুলিকে এই পর্যায়ে তৈরী করা হয় না। এইগুলিকে আলাদাভাবে তৈরী করা হয় এবং তারপর সেগুলিকে মুল অংশের সঙ্গে জোড়া দেওয়া হয়। এরপরে, বাইরের গায়ে সাজসজ্জার জন্য বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশার ছাঁচ খোদাই করে তোলা হয়।

কাদামাটি’র সঙ্গে ছাই এবং বালি মেশান হয় ও পা দিয়ে ঠেসা হয় বা দলাই মালাই করা হয়, সংগ্রহ করা হয় এবং লাহাসুর দিয়ে কাটা হয়। তারপর এটাকে পিড়ার উপর হাত দিয়ে ঠাসা হয় এবং একটা মাটির তাল তৈরী করা হয়। সমস্ত রকম শক্ত বা কঠিন পদার্থ বাদ দেওয়া হয়। তৈরী হওয়া মাটির তালটি একটি চাকার উপরে রাখা হয় তা থেকে বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরী করার জন্য। কুমোরের চক্রে ছোট ছোট কাঠের দন্ড থাকে যেটা চক্রের বাইরের বৃত্ত’র সঙ্গে যুক্ত, কাঠ অথবা ধাতুর আবর্তনকীলকের উপর পাক খায় এবং একটা বৃহ চাকার কেন্দ্রস্থল আছে যেটা একটা আবর্তিত টেবিল হিসাবে কাজ করে। বৃত্তাকারপ্রান্তের ছিদ্রপথে একটা খাড়া লাঠি ঢোকানো হয়। কুমোর ঠাসা মাটি চক্রের কেন্দ্রস্থলে ছুড়ে দেয় এবং লাঠির সাহায্যে চাকাটিকে চতুর্দিকে ঘোড়ায়। অপকেন্দ্র বলের জন্য মাটির তালটি বাইরের দিকে এবং উপরের দিকে টানতে থাকে এবং ধীরে ধীরে একটা পাত্র বা আধারের রুপ নেয়। একটা সূতো দিয়ে এটাকে কেটে টেনে নেওয়া হয়, শুকানো হয় এবং কুমোরের চুল্লিতে পোড়ানো হয়। পোড়ানোর পর মাটির জিনিসগুলি টেরাকোটায় পরিণত হয়।

মাটির পাত্রগুলি সাধারণ খোলা মাটির গর্তওয়ালা চুল্লি তে পোড়ানো হয় যেটা খুবই কার্যকর এবং কম খরচ সাপেক্ষ 7০০ – 8০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় মাটির পাত্র পোড়ানোর জন্য। পাত্রগুলি সাজান হয় পাত্রের স্তরে স্তরে, একটা পাতার স্তর, গাছের ছোট ছোট ডাল এবং ঘুঁটোও কোন কোন সময় দেওয়া হয়। স্তুপ বা ঢিবি টি ধানের খড়ের মোটা চাদরে ঢাকা হয় যেটা পরবর্তীকালে দো-আঁশ মাটির পাতলা আস্তরণ দিয়ে ঢাকা হয়। আগুন জ্বলতে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে।

কাল,লাল এবং হলুদ মাটি ব্যবহার করা হয় টেরাকোটার প্রকরণ বানানোর জন্য, যেগুলো রাজস্থান এবং দিল্লী থেকে ছোট ছোট টুকরোতে সংগ্রহ করা হয়। জিনিসগুলি ভালভাবে মেশানো হয় এবং প্রখর রৌদ্রে শুকানো হয় যাতে যদি কোন প্রকার জলীয় বাষ্প থাকে তাহলে সেটা বাষ্পীভূত হয়ে যাবে। তারপর ভেজা মাটির সংমিশ্রনটি সূক্ষ্ম ছাকনীর মাধ্যমে পরিশ্রুত করা হয় কাঁকড় বা নুড়ি বাদ দেওয়ার জন্য। হাত দিয়ে সঠিক আকার দেওয়ার পর পদগুলি তারপর তাক্ষনিক ভাবে তৈরী করা চুল্লীতে, যেগুলি আচ্ছাদিত করা থাকে ঘুঁটো, জ্বালানী এবং কাঠের গুঁড়ো ইত্যাদি দিয়ে, সেকা হয় ।

ছাই এবং বালি দিয়ে মেশানো মাটি পা দিয়ে ঠেসা হয়। তারপর পিড়ার উপরে হাত দিয়ে ঠেসা হয় এবং মাটির তাল তৈরী করা হয়। সমস্ত ধরনের শক্ত জিনিস যেমন কাঁকড়, নুড়ি, ছোট নুড়ি, গাছের ছোট ডালপালা ইত্যাদ সরিয়ে ফেলা হয়। তৈরী হওয়া মাটির তালটি একটি চাকার উপরে রাখা হয় তা থেকে বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরী করার জন্য। কুমোরের চক্রে নরম কাঠের দন্ড থাকে যেটা চক্রের বাইরের বৃত্ত’র সঙ্গে যুক্ত, কাঠ অথবা ধাতুর আবর্তনকীলকের উপর পাক খায় এবং একটা বৃহ চাকার কেন্দ্রস্থল আছে যেটা একটা আবর্তিত টেবিল হিসাবে কাজ করে। বৃত্তাকারপ্রান্তের ছিদ্রপথে একটা খাড়া লাঠি ঢোকানো হয়। ঠাসা মাটির তাল কুমোর চক্রের কেন্দ্রস্থলে ছুড়ে দেয় এবং লাঠির সাহায্যে চাকাটিকে চতুর্দিকে ঘোড়ায়। অপকেন্দ্র বলের জন্য মাটির তালটি বাইরের দিকে এবং উপরের দিকে টানতে থাকে এবং ধীরে ধীরে একটা পাত্র বা আধারের রুপ নেয়। একটা সূতোর দিয়ে এটাকে কেটে টেনে নেওয়া হয়, শুকানো হয় এবং কুমোরের চুল্লিতে পোড়ানো হয়। পোড়ানোর পর মাটির জিনিসগুলি টেরাকোটায় পরিণত হয়।

কৌশল :-


মহিলা কুমোরেরা হাত দিয়ে অনন্য জিনিস গঠন করার কৃকৌশল অভ্যাস করেন, যেটা চাকা আবিস্কারের পূর্বে অর্থ্যা নব্য প্রস্তরযুগীয় সময়ের কথা সম্ভবত মনে করিয়ে দেয়। যে সমস্ত দ্রব্য তৈরী করা হয় সেগুলি হল সমান তলের পাত্র, জল পরিশ্রুত করার যন্ত্র, ফুলদানি, ধূপ পোড়ানোর তাপক, প্রদীপ , হূঁকা।

কি ভাবে পৌঁছাবেন :- 


আকাশ পথে :- 


কোলকাতার বিমানবন্দর দমদমে অবস্থিত, শহরের কেন্দ্রবিন্দু থেকে প্রায় 17 কিমি উত্তর পূর্বে। বেশীরভাগ অন্তর্দেশীয় বিমান পরিবহণ ব্যবস্থার সরাসরি পরিষেবার ব্যবস্থা আছে কোলকাতাতে ও কোলকাতা হইতে ভারতবষের্র অন্যান্য শহরগুলিতে যেমন দিল্লী, মুম্বাই, চেন্নাই, পাটনা, বারাণসী, লখ্নৌ ইত্যাদি। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বেশীর ভাগ দেশেই কোলকাতা থেকে সরাসরি বিমান পরিবহণ ব্যবস্থা আছে।

 

সড়ক ব্যবস্থার মাধ্যমে :- 


ভারতবর্ষের বেশীরভাগ শহরের সঙ্গেই সড়ক ব্যবস্থার মাধ্যমে কোলকাতা সংযুক্ত। শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত এসপ্ল্যানেড (ধর্মতলা) প্রান্তিক কেন্দ্রই বাস পরিষেবার প্রধান প্রান্তিক কেন্দ্র। ঢাকা – কোলকাতা বাস পরিষেবা শুরুই হল নূতন উন্নয়ন। বাসগুলি বর্ণাঢ্য, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ও আরামদায়ক। 


রেল পথের পথের মাধ্যমে :- 


এই শহরে দুটি গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন আছে—একটা হাওড়ায় ও অন্য একটা শিয়ালদহতে। দেশের অন্যান্য প্রান্ত হইতে রেল যোগযোগের মাধ্যমে কোলকাতাকে সংযুক্ত করেছে।  অত্যন্ত দ্রুতগামী ট্রেন যেমন –রাজধানী এক্সপ্রেস এবং শতাব্দী এক্সপ্রেস এই শহরকে দিল্লীর সঙ্গে এবং কাছাকাছি শহরগুলিকে যেমন বোকারো এবং রাউরকেল্লাকে সংযুক্ত করেছে । করমন্ডল এক্সপ্রেস ও গীতাঞ্জলী এক্সপ্রেস কোলকাতাকে সংযুক্ত করেছে যথাক্রমে চেন্নাই ও মুম্বাই এর সঙ্গে। 








বেস্ট বেঙ্গল     কোলকাতা     সুরেশ অমিয়া মেমোরিয়াল ট্রাস্ট